
প্রতিটি ফোন কলে সঠিকভাবে ১০ সেকেন্ডের পালস বাস্তবায়ন করা হয়েছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করতে সব মোবাইল ফোন অপারেটরে টেকনিক্যাল অডিট করতে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। একই সঙ্গে ১০ সেকেন্ড পালস দেওয়ার ফলে অপারেটরদের আয়ে কী ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে বা গ্রাহক কী ধরনের সুবিধা-অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন তা পর্যবেক্ষণ করা হবে।
এক্ষেত্রে সরকারের ভ্যাট ও অন্যান্য আয়ে কী প্রভাব পড়বে তাও এ অডিট কার্যক্রমের মাধ্যমে জানা সম্ভব হবে। অক্টোবরের শুরুর দিকে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রতিটিতে এ অডিট করা হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়া আহমেদ। তিনি বলেন, তাদের নির্দেশনার ফলে ১০ সেকেন্ড পালস কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে তা পর্যবেক্ষণ করে দেখতে চান। তিনি বলেন, ৩০ দিনের মধ্যে অডিট শেষ করা হবে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে অডিট দল গঠনের কাজ চলছে।
জানা গেছে, বিটিআরসির কমিশন বৈঠকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিটিআরসির প্রতিনিধিদের সঙ্গে অপারেটরগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে অডিট দল গঠন করা হবে। অডিট দল সব অপারেটরের সুইচ রুম এবং বিলিং সিস্টেম পর্যবেক্ষণ করবে বলেও জানিয়েছে সূত্র।
অডিটের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অপারেটররা। এ বিষয়ে রবির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান তারা। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এসে দেখা যাওয়া উচিত পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে। তা ছাড়া সরকারের আয় প্রাপ্তির বিষয়ে কী প্রভাব পড়বে সেটিও দেখতে হবে। একইভাবে গ্রামীণফোনের করপোরেট বিভাগের প্রধান মাহমুদ হোসাইনও জানান, বিটিআরসি দেখে যেতে পারে, এতে সমস্যার কিছু নেই।
এর আগে সিটিসেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহবুব চৌধুরী সমকালকে জানান, ১০ সেকেন্ডের পালস বাস্তবায়নে তাদের প্রতিদিনের আয়ের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। এর ফলে প্রথম সপ্তাহে তাদের আয় ১৭ শতাংশ কমেছে বলেও জানান তিনি।
রবি জানিয়েছে, তারা এখনও ১০ সেকেন্ডের পালস বাস্তবায়নের হিসাব করেনি। কিন্তু অবশ্যই আয়ের ওপর এর প্রভাব ফেলছে। এতে সরকারের আয়ও কমে যাবে বলে জানায় তারা। যত টাকার কথা হয় তার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তা ছাড়া অপারেটরদের মোট আয়ের সাড়ে পাঁচ শতাংশ পায় বিটিআরসি। প্রতি বছর এই দু'খাত থেকে সরকারের কোষাগারে হাজার হাজার কোটি টাকা জমা পড়ে।
এদিকে অন্য একটি অপারেটর জানিয়েছে, ১০ সেকেন্ডের পালসের ফলে কম কথা যারা বলেন তাদের জন্য ভালো হলেও যারা একটু বেশি সময় কথা বলেন তাদের বিল বেড়েছে। আগে অনেক অপারেটরেই প্রথম মিনিটে একরকম বিল ছিল। তারপর দ্বিতীয় মিনিট থেকে বিলের ধরন বদলে যেত। এখন প্রতি ১০ সেকেন্ডে একই রকম বিল। তা ছাড়া আগে এক বা পাঁচ সেকেন্ড পালসের যে সুবিধা ছিল তার অনেকই উঠে গেছে। ফলে এই সুবিধাভোগী গ্রাহকদের বিলও বেড়েছে।
সৌজন্যে: সজল জাহিদ, সমকাল
No comments:
Post a Comment