শুক্রবার বন্ধ হচ্ছে প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিম বিক্রি। যে কোন পরিচয়পত্রে সিম কেনা যাবে

(প্রিয় টেক) শুক্রবার থেকে বন্ধ হচ্ছে মোবাইল ফোনের প্রি-অ্যাকটিভেটেড (আগে থেকে চালু) সিম বিক্রি। ১২ অক্টোবরের পর থেকে কেনার সময় গ্রাহকের দেওয়া তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরই সিম চালু করা হবে। কিন্তু তথ্য কিভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে তা নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি আর মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে ঠেলাঠেলির কোন সুরাহা হয়নি। এর মধ্যে আবার উচ্চ আদালত থেকে বলা হয়েছে মোবাইল ফোনের সিম কেনার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা যাবে না। ফলে বুধবার বিটিআরসি নতুন করে নির্দেশনা দিয়েছে।
সেখানে বলা হয়েছে ছবি আছে এমন যেকোন পরিচয়পত্র দিয়ে সিম কেনা যাবে। কিন্তু তা রিটেলাররা বিক্রি করতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোনের কাস্টমার সেন্টার থেকে নিতে হবে। আর রিটেলারের কাছ থেকে সিম কিনতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র অবশ্যই থাকতেই হবে। অপারেটররা বলছেন, এতে পরিস্থিতি আরো জটিল হল।
বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন গতকাল বলেছেন, ভুল তথ্যে কোনো সিম রেজিস্ট্রেশন হলে তার দায় অপারেটরদের নিতে হবে। এর জন্য আইন অনুযায়ি তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না। তবে রিটেলাররা জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া সিম বিক্রি করতে পারবে না। শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট অপারেটরের কাস্টমার সেন্টার থেকে ছবি লাগানো যে কোন পরিচয়পত্র দিয়ে সিম বিক্রি করতে পারবে। আর তা নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে।
বুধবার বিটিআরসির সিস্টেম এন্ড সার্ভিস বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল রাকিবুল হাসানের স্বাক্ষরিত চিঠি অপারেটরদের কাছে পাঠানো চিঠিনো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, অফিসের ছবি লাগানো পরিচয়পত্র জমা দিয়ে যে কোনো অপারেটরের কাস্টমার সেন্টার থেকে সিম বা রিম কেনা যাবে। আর রিটেলারকে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সিম বিক্রি করতে হবে। গ্রাহকের দেওয়া তথ্য পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েই সিম চালু করবে সংশ্লিষ্ট অপারেটর। কোনো রিটেলার নির্দেশ না মানলে তার বিরুদ্ধে মামলাও করতে হবে সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে। গত ক’দিন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েও বিটিআরসির পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রেজিস্ট্রেশনবিহীন প্রতিটি সিমের জন্য অপারেটরদের ৫০ ডলার করে জরিমানা করার বিধান রয়েছে। ইতিমধ্যে অবৈধ ভিওআইপিতে ব্যবহার ব্যবহার করা রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিমের জন্য সবগুলো অপারেটরকে বিপুল অংকের টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অন্যদিকে অপারেটররা বলছেন, বিটিআরসির নির্দেশনা মেনে সব কাগজপত্র তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করবেন। কিন্তু সেই কাগজপত্র সঠিক কি-না তা তাদের পক্ষে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আর এ দায় কোনভাবেই তারা নিতে রাজি নয়। এতে করে সিম বিক্রি শূণ্যের কোঠায় নেমে আসার আশঙ্কাও তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিটিআরসির নির্দেশনা মেনে তারা সব কাগজপত্র নিতে পারেন। কিন্তু তা ঠিক না ভুল তাদের পক্ষে নিশ্চিত করা কতটা সম্ভব? তিনি বলেন, কেউ ভুয়া জাতীয় পরিচয় পত্র দিলে তা কিভাবে তারা নিশ্চিত হবেন যে সেটি ভুয়া। কারণ জাতীয় পরিচয় পত্রের সার্ভারে ঢোকার সুযোগ তাদের নেই। আর কিভাবে তারা তথ্য নিশ্চিত করবেন সে ব্যাপারেও বিটিআরসি তাদের গাইড লাইন দেয়নি।
বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তাদের কাছে চিঠি লিখে বলা হয়েছে, গত ৬ মাসে ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি যতগুলো নাম্বারের রেজিস্ট্রেশন ফরমের তথ্য নিয়েছে তার সবগুলোই ভুয়া। তিনি বলেন, শুধু লোক দেখানো রেজিস্ট্রেশন করলেই হবে না, তাদের আন্তরিকতা থাকলেই অর্ধেক ভুয়া রেজিস্ট্রেশন এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। তাই তিনি দেশের স্বার্থে এ ব্যাপারে অপারেটরদের আন্তরিক হওয়ার অনুরোধ করেন।

No comments:

Post a Comment