- Back to Home »
- report , teletalk »
- আন্তর্জাতিক কলের অবৈধ টার্মিনেশনের মাধ্যম হিসেবে টেলিটক শীর্ষে
আন্তর্জাতিক কলের অবৈধ টার্মিনেশনের (ভিওআইপি) মাধ্যম হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি টেলিটকের সিম। ভিওআইপি নিশ্চিতকারী কোম্পানি মিউচি সলিউশনের হিসাবে গত ১৯ মাসে অবৈধ পন্থায় আসা ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৯টি কলের মধ্যে ৫৯ দশমিক ২১ ভাগই এসেছে টেলিটকের মাধ্যমে।
গত বছরের মে মাস থেকে এ বছর ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯ মাসে মিউচি সলিউশন নমুনা হিসেবে বাংলাদেশে ১৫ লাখ ২০ হাজার কল পাঠায়। এর মধ্যে ৩৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ কলই আসে ভিওআইপির মাধ্যমে। ভিওআইপির মাধ্যমে আসা ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৪২৯ কলের মধ্যে কেবল টেলিটকের সিমেই এসেছে ৩ লাখ ১৬ হাজার ৪০৮টি কল। টেলিটকের মাত্র ৫৮ হাজার ৯১টি সিমের মাধ্যমেই এই কল এসেছে। সে ক্ষেত্রে অপারেটরটির একটি সিম বারবার এই অবৈধ কাজে ব্যবহার করা হলেও তা বন্ধ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
টেলিকম কোম্পানী | কলের পরিমান |
---|---|
টেলিটক | ৩,১৬,৪৩৮ |
বিটিসিএল | ৩,৩৬৭ |
বাংলালিংক | ৯০,১১৫ |
এয়ারটেল | ৭৯,২৪১ |
গ্রামীণ | ৩,৬৪৪ |
রবি | ৩৯,৬২১ |
সিটিসেল | ১,৩৬০ |
অন্যান্য | ৬৭৩ |
এদিকে মিউচি এবং বিটিআরসির এ তথ্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে টেলিটক বলছে, গত এক বছরে বিটিআরসি যে অভিযান পরিচালনা করেছে তার কোথাও টেলিটকের সিম পাওয়া যায়নি।
মিউচির তথ্য বলছে, টেলিটকের পর ভিওআইপির অবৈধ এ ব্যবসা চালিয়ে নিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলালিংকের সিম। ১৯ মাসে তাদের ৬৭ হাজার ৪২৬টি সিমের মাধ্যমে ৯০ হাজার ১১৫টি কল এসেছে বলে প্রমাণ পেয়েছে সিম ডিটেকশন যন্ত্র। এয়ারটেলের ৫৪ হাজার সিমের মাধ্যমে ৭৯ হাজার ২৪১টি কল এসেছে। আর রবির ২৩ হাজার ৯৭৯টি সিমের মাধ্যমে ৩৯ হাজার ৬২১টি আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল এসেছে বলে বলছে সিম ডিটেকশন বক্স।
এই হিসাবে সিটিসেল এবং গ্রামীণফোনের সিম পাওয়া গেছে মাত্র কয়েকটি। গ্রামীণফোনের ২৯শ' ১৮টি সিমের মাধ্যমে ৩ হাজার ৬৪৪টি কল আসার প্রমাণ পাওয়া গেছে। একইভাবে সিটিসেলের ৯২৪টি সিমের মাধ্যমে ১৩শ' ৬০টি কল এসেছে। কল রাউটিংয়ের কাজে ল্যান্ডফোনের সংযোগও ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকারি ল্যান্ডফোন কোম্পানি বিটিসিএলের ৮৬১টি সংযোগের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩৬৭টি কল আসার কথা বলছে মিউচি সলিউশন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, সিটিসেলের সিম নিয়ে অবৈধ ব্যবসায়ীদের খুব বেশি লাভ হয় না। কারণ যারা বড়মাত্রায় অবৈধ কল টার্মিনেশনের ব্যবসা করে তারা বিশেষ একটি বক্সে একবারে ৫০ থেকে একশ' সিম ঢুকিয়ে কল টার্মিনেশন করে। সিটিসেলের প্রযুক্তি ভিন্ন। ফলে এই সিম ব্যবহার করতে ভিন্ন বক্স লাগে। তাদের সিম তেমন একটা ধরা পড়ে না।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স-করপোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের মহাপরিচালক মাহমুদ হোসাইন বলেন, আগে মোবাইল অপারেটরদের অবৈধ টার্মিনেশনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হলেও এখন আর তা বলার কোনো সুযোগ নেই।
বাংলালিংকের রেগুলেটরি অ্যান্ড লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স পরিচালক জাকিউল ইসলাম বলেন, মিউচি সলিউশনে যে কয়টি হিসাব ধরা পড়ে, নিজস্ব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তার চেয়েও অনেক বেশি সিম তারা বন্ধ করেন। এতে অবশ্য তাদের প্রতি মাসেই কোটি টাকার ওপর খরচ হচ্ছে। কিন্তু দায় থেকে মুক্তি পেতে এটি মেনে নিয়ে নিজেরাই সিম বন্ধ করে দিচ্ছেন।
এর আগে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসায় জড়িত থাকায় গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং সিটিসেল কয়েক দফায় প্রায় নয়শ' কোটি টাকা জরিমানা গুনতে বাধ্য হয়। তার পরেই নিজেদের স্বার্থেই কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিটিআরসিতে সিম ডিটেকশন বক্স বসিয়ে দেয় অপারেটরগুলো।
সৌজন্যেঃসমকাল