FVUvFxkZ6nvxgeoHh3QU3_XzXjY

আবার খুলে দেয়া হচ্ছে পাবলিক সুইচ টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন)। অবৈধ ভিওআইপি করার দায়ে ২০ মাস আগে বন্ধ করে দেয়া পাঁচটি পিএসটিএন কোম্পানির মধ্যে গত মাসে দুটি কোম্পানির লাইসেন্স ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি তিনটি কোম্পানি এখনও বিটিআরসির শর্ত পূরণ করতে পারেনি। তবে তারা শর্ত পূরণের জন্য সময় নিয়েছে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) জিয়া আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, ওয়ার্ল্ডটেল, র্যাংকসটেল সব পাওনা-দেনা পরিশোধ করে বিটিআরসির দেয়া শর্ত মেনে লাইসেন্স নিয়েছে। ২০১০ সালের ১৫ থেকে ২৩ মার্চের মধ্যে ঢাকা ফোন, পিপলসটেল, ন্যাশনালফোন, ওয়ার্ল্ডটেল ও র্যাংকসটেল অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েজ ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) করার দায়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। বিটিআরসি একই বছরের মে মাসে কোম্পানিগুলোর লাইসেন্সও বাতিল করে দিয়েছিল। অবৈধ ভিওআইপি আবার অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানিয়েছে, পরে যখন দেখা যায় পিএসটিএন বন্ধ করেও ভিওআইপি রোধ করা যাচ্ছে না। তখন পিএসটিএনের পৰ থেকে মন্ত্রণালয়ে আবেদনের প্রেৰিতে লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের প্রেৰিতে একে একে পিএসটিএনের বন্ধ দরোজা খুলে যাচ্ছে। যেহেতু ভিওআইপি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। একটা সময় বিটিআরসি ভিওআইপির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আন্তর্জাতিক বৈধ কল আদান-প্রদান ৬ থেকে সাড়ে ৬ কোটি মিনিটে উন্নীত করেছিল। এখন আবার সেই কলরেট নেমে ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি মিনিটে চলে এসেছে। বিভিন্ন টেলিফোন অপারেটর থেকে হরদম আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান হচ্ছে। বিশেষ করে ভিওআইপিতে এখন টেলিটক শীর্ষে অবস্থান করছে। বাকি সাড়ে ৩ কোটি মিনিটই অবৈধ পথে আদান প্রদান হচ্ছে। এতে বিপুল অঙ্কের টাকা সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। লাভবান হচ্ছে এর সঙ্গে জড়িত কিছু রাঘববোয়াল। এই রাঘববোয়ালদের সহযোগিতায় রয়েছেন সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। অবৈধ ভিওআইপির জন্য দায়ী হচ্ছে বিটিসিএল। বিটিসিএল পূর্ণাঙ্গ ইন্টার কানেকশন এঙ্চেঞ্জ (আইসিএঙ্) না বসানোর কারণেই আনত্মর্জাতিক কলগুলো 'ডাইভার্ট' করে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরকে দেয়া হচ্ছে। এতে বিটিসিএলের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীও কোটি কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। পূর্ণাঙ্গ আকারে আইসিএক্স বসানোর জন্য বিটিআরসি ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৯ চিঠি দিয়েছে বিটিসিএলকে। চিঠির অনুলিপি পাঠানো হয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে। এ ব্যাপারে বিটিসিএল এবং মন্ত্রণালয় রহস্যজনকভাবে নীরব রয়েছে। তারাও পূর্ণাঙ্গ আইসিএঙ্ বসানোর ব্যাপারে কোন গরজ দেখাচ্ছে না।
র্যাংকসটেল ২০ মাস পর আবারও সচল হচ্ছে। র্যাংকসটেল কর্তৃপৰ জানিয়েছে, সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী ডিসেম্বরে তাদের যাত্রা আবার শুরম্ন হচ্ছে। দেশীয় বিনিয়োগের কথা চিনত্মা করে পাঁচটি বেসরকারী ল্যান্ডফোন কোম্পানির লাইসেন্স পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধানত্ম নিয়েছে সরকার। প্রথম পর্যায় গত ১৪ জুলাই লাইসেন্স ফিরিয়ে দেয়া হয় র্যাংকসটেলকে। এর পর ওয়ার্ল্ডটেলের লাইসেন্সও ফিরিয়ে দেয়া হয়। র্যাংকসটেল ও ওয়ার্ল্ডটেলের সুইচ রম্নমগুলো ঠিকঠাক করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে এ দুটি কোম্পানি তাদের কার্যক্রম পুরোদমে চালু করতে পারবে। র্যাংকসটেল বলেছে, তাদের মোট তিন লাখ গ্রাহক রয়েছে। কার্যক্রম শুরম্ন হলে তাদের গ্রাহকরা আবার ফিরে আসবে। ফোন কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলেও কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বড় অংশ চাকরিতে বহাল ছিল।
র্যাংকসটেলের এক কর্মকর্তা জানান, কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর গ্রাহকদের ল্যান্ডফোন সেটের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেছে। এমন কারও কারও সেটও নষ্ট হয়ে গেছে। সেগুলো নতুন করে দেয়ার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তারা আগে যেভাবে টেলিফোন সেবা দিয়ে আসছিল। এবার তারা সেবার মান আরও বাড়াবে। ইন্টারকানেকশন কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে কাজ চলছে। এজন্য তারা বিটিসিএল, টেলিটক, সিটিসেল, এয়ারটেলের সঙ্গে চুক্তি করেছে। অল্পদিনের মধ্যে গ্রামীণফোন, বাংলালিংকসহ অন্য অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তি করবে। লাইসেন্স পেতে জরিমানার পাশাপাশি বিটিআরসির বিরম্নদ্ধে পিএসটিএন কোম্পানিগুলোর করা সব মামলা তুলে নিতে হয়েছে। আনত্মঃসংযোগ ফির বকেয়া পরিশোধ করতেও হয়েছে। সব শর্ত পূরণ করতে পারলে ঢাকাফোন, পিপলসটেল ও ন্যাশনালফোনকেও লাইসেন্স ফিরিয়ে দেয়া হবে।

- Copyright © 2013 telecom bd - Metrominimalist - Powered by Blogger - Designed by Johanes Djogan | Distributed by Rocking Templates -