- Back to Home »
- banglalink , report »
- টেলিটকের থ্রিজি সেবা আটকে গেছে
বেশ কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ঋণ পায়নি রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর TELETALK। লবিস্ট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেও লাভ হয়নি। এর মধ্যে ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় খরচের হিসাবও বেড়ে গেছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ল্যান্ডফোন কোম্পানি বিটিসিএলের কাছ থেকে জায়গা বুঝে না পাওয়াকেও থ্রিজি প্রকল্পের স্থবিরতার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কয়েক মাস আগে ঘোষণা করা হয়, ২৬ মার্চ গ্রাহকসেবার জন্য থ্রিজি প্রযুক্তি উন্মুক্ত করবে টেলিটক। এখনও পর্যন্ত কাজের যে গতি তাতে আগামী ছয় মাসেও এ সেবা কার্যক্রম শুরু হবে কি-না অনিশ্চিত। টেলিটকের একটি সূত্র অবশ্য বলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অল্প পরিসরে কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।
চীনভিত্তিক এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ২১ কোটি ১০ লাখ ডলারের চুক্তি করে টেলিটক। চুক্তি অনুসারে একই দেশের হোয়াওয়ে এবং অ্যালকাটেল কোম্পানি যন্ত্রপাতি সরবরাহের প্রস্তুতি নেয়। আগের সিডিউল অনুসারে গত ১৪ ডিসেম্বর থ্রিজির যন্ত্রপাতি চীন থেকে বাংলাদেশে এসে পেঁৗছানোর কথা। তারপর আরও এক মাস পেরিয়েছে। টেলিটক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখনই শিপমেন্ট হলেও মালপত্র আসতে এক মাসের বেশি সময় লাগবে। বাংলাদেশ অংশে টেলিটকের কাজ শেষ না হলে শিপমেন্ট শুরু হবে না বলেও চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে।
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান অবশ্য বলছেন, টাকা-পয়সা নিয়ে ঝামেলার কারণেই কিছুটা পিছিয়ে পড়ছেন তারা। সংকট দ্রুত নিরসন হবে_ এমনটিও আশা করেন তিনি। টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুও শোনাচ্ছেন আশার বাণী। সমকালকে তিনি বলছেন, ২৬ মার্চ যদি না-ও হয়, জুনের মধ্যে থ্রিজি চালু হবে।
গত বছরের ৩ মে ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকার থ্রিজি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক), যার মধ্যে দেশীয় অর্থ ৪২৪ কোটি টাকা। বাকি ১ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা এক্সিম ব্যাংকের বার্ষিক ২ শতাংশ সুদের ঋণ। প্রকল্প অনুমোদনের পরপর অর্থ সংস্থানে নামে টেলিটক। ৩০০ কোটি টাকার ঋণ পেতে আইআইবিএস নামের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিও করে তারা। আইআইবিএস ব্যর্থ হয়। পরে টেলিটক নিজস্ব উদ্যোগে কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ফল পায়নি। ট্রাস্ট ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়াসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হয় কোম্পানিটি। তাছাড়া এরই মধ্যে ডলারের মূল্য ১৪-১৫ টাকা বেড়ে
যাওয়ায় সরকারের অংশের ৪২৪ কোটির অঙ্ক আরও অন্তত ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
এদিকে প্রথম দফায় ঢাকার যেসব এলাকায় থ্রিজির কার্যক্রম শুরু হবে তার জন্যে শেরেবাংলা নগর, রমনা এবং মগবাজারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিটিসিএলের কাছে জায়গা চেয়েছে টেলিটক। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদও এ বিষয়ে বিটিসিএলকে সুপারিশ করেন। এখনও পর্যন্ত সে জায়গা বুঝে পায়নি টেলিটক। বিটিসিএল বলছে, দুটোই সরকারি কোম্পানি হলেও দরদামের ব্যাপার আছে। গণপূর্ত অধিদফতর থেকেই মূল্য বেঁধে দেওয়া আছে। সে মূল্য না দিলে টেলিটককে জায়গা দেওয়ার সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে থ্রিজি প্রকল্পে টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক-প্রকল্প পরিচালকসহ অন্য কর্মকর্তারাও নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বৈঠকে টেলিটক বিটিসিএলের কাছ থেকে ঋণ চাইলেও অনীহা রয়েছে বিটিসিএলের। এর আগে সরকারের অপর কোম্পানি টেলিফোন শিল্প সংস্থার ল্যাপটপ প্রকল্পের জন্যে ২৫ কোটি টাকা ঋণ দিলেও এখনও তা বুঝে পায়নি তারা। সে কারণে নতুন করে আর কাউকে ঋণ দিতে অনাগ্রহী কোম্পানিটি। টেলিটক বলছে, বিটিসিলের যেসব ব্যাংকে ফিক্স ডিপোজিট আছে সে ডিপোজিটের গুডউইল ব্যবহার করে ঋণ পাওয়া সম্ভব।
মন্ত্রী রাজিউদ্দিন রাজু বলেন, প্রয়োজনে যে কোনো জায়গা থেকে টাকা জোগাড় করা হবে।