- Back to Home »
- report »
- অবৈধ ভিওআইপি করছে বিটিসিএল
ভিওআইপির
অবৈধ ব্যবসা করছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি
লিমিটেড বা বিটিসিএল। সরকার কয়েক বছর ধরে অবৈধ এই ব্যবসার বিরুদ্ধে অনেক
ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। অথচ খোদ সরকারি সংস্থাই নির্বিঘ্নে এই কাজটি করে
যাচ্ছে।
সরকারি ল্যান্ডফোন প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে দিনে কত মিনিট বৈদেশিক কল আদান-প্রদান হচ্ছে, তারও কোনো হিসাব নেই। হিসাব পাওয়ার যন্ত্র মহাখালী আইটিএক্সের সিডিআর (কল ডিটেইল্ড রিপোর্ট) ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এতে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিটিসিএলের এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রাজিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিজেও এ অভিযোগ শুনেছি। তবে এটি সম্পূর্ণ গুজব। যদিও আমি জানি আমার মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত যাবতীয় অভিযোগের জন্য মন্ত্রী হিসেবে আমাকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’ কী পদক্ষেপ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় ভালো-খারাপ মিশিয়ে লোকজন থাকে। দেশ ও সরকারের ক্ষতি হয়, এমন কাজ কেউ করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অন্য নম্বর দিয়ে ভিওআইপি: গত ১১ এপ্রিল মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোন তাদের নম্বর দিয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানের অভিযোগ আনে বিটিসিএলের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও বিটিসিএলকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ মার্চ ও পয়লা এপ্রিল, এই দুই দিনে গ্রামীণফোন সিরিয়াল নম্বর ৮৮০১৭০২০০০০৭৪ দিয়ে শেরেবাংলা নগর অ্যালকাটেল এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সাত লাখ পাঁচ হাজার ৫৪৯ সেকেন্ডে মোট এক হাজার ৬৫৯টি অভ্যন্তরীণ কল এবং মহাখালী আইটিএক্স-৫ দিয়ে ৬০ লাখ ২৫ হাজার ২৪২ সেকেন্ড ব্যবহার করে মোট ১৩ হাজার ৩৯১টি বৈদেশিক কল আদান-প্রদান করা হয়েছে। এ হিসাবে মাসে দুই লাখের বেশি বিদেশি কল অবৈধভাবে করার অভিযোগ করেছে গ্রামীণফোন।
জড়িত ব্যক্তি: অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিটিসিএলের অবৈধ ভিওআইপির সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থাও সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে জড়িত ব্যক্তিদের নামের তালিকাসহ পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে।
অবৈধ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হিসেবে নাম রয়েছে, মহাখালী আইটিএক্সের বিভাগীয় প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান প্রামাণিক ও সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী রোনাল্ড চাকমা, মগবাজার টেলিফোন এক্সচেঞ্জের টেলেক্স, টিপি ও ইন্টারনেট বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী জমিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, একই এক্সচেঞ্জের আইটিএক্সের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তৌফিক এবং সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানাসহ এক ডজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এঁদের মধ্যে হাবিবুর রহমান প্রামাণিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০১০ সালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে। ওই মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে জমা দেওয়া হবে বলে দুদক সূত্র জানায়। যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। ধমক দিয়ে বলেন, ‘মিডিয়ার কারণে শান্তিতে বাস করার উপায় নেই।’
এই এক্সচেঞ্জের মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল মামুনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই অভিযোগ প্রথম তিনি প্রতিবেদকের কাছ থেকেই শুনলেন।
সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানা বিগত জোট সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মাসুদ রানার বিষয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্স। অবৈধ ভিওআইপির অভিযোগ সম্পর্কে মাসুদ রানার কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিটিসিএলের কে কে এসব তথ্যের জোগান দিয়েছে, তাদের নাম জানতে চান। একপর্যায়ে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী রোনাল্ড চাকমার বিরুদ্ধে ভিওআইপির অভিযোগ অবশ্য অল্প দিনের। রোনাল্ড চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কার কাছে গল্প শুনতে গিয়েছিলেন। যারা ভিওআইপি করছে, তাদের খবর পান না, নিরীহদের পেছনে দৌড়ান।’
মগবাজার টেলিফোন এক্সচেঞ্জের টেলেক্স, টিপি ও ইন্টারনেট বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর তাঁর সম্পর্কে অভিযোগ অস্বীকার করে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নষ্ট সিডিআর, আইসিএক্সও নেই: বিটিসিএলের সিডিআর (কল ডিটেইল্ড রিপোর্ট) বিকল থাকলেও এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো মাথাব্যথা নেই। আবার ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিটিসিএলকে ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) লাইসেন্স দেওয়া হলেও আজও এক্সচেঞ্জ স্থাপন করা হয়নি। ফলে বিদেশি কলের পাশাপাশি দেশি কলেরও সঠিক হিসাব তাদের কাছে নেই।
নিয়ম অনুযায়ী, দৈনিক বিদেশি কলের পরিমাণ সপ্তাহ শেষে বিটিআরসিতে জমা দেওয়ার কথা। বিধি অনুযায়ী কলপ্রতি তিন সেন্ট হিসাবে বিটিসিএল আয়ের ৬০ শতাংশ সরকারকে রাজস্ব হিসাবে জমা দেবে। কিন্তু অবৈধ ভিওআইপি করায় সরকার পুরো রাজস্ব থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে।
অতিরিক্ত এসটিএম-১: নিরবচ্ছিন্নভাবে ও দ্রুত আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানে ব্যবহার করা হয় এসটিএম-১ (সিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সপোর্ট মডিউল)। বিটিআরসির তথ্যমতে, বৈদেশিক কল আদান-প্রদানের লাইসেন্সপ্রাপ্ত মীর টেলিকম ও নভোটেলের পাঁচটি করে এবং বাংলাট্রাকে চারটি এসটিএম ১ রয়েছে। অন্যদিকে বিটিসিএলের রয়েছে ৫৪টি এসটিএম ১।
প্রায় ১০ গুণের বেশি এসটিএম-১ ব্যবহার করেও বিটিসিএল, ওই সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একটির সমানও বিদেশি কল আনা-নেওয়া করতে পারে না।
তাহলে অতিরিক্ত এসটিএম ১ দিয়ে কী করা হয়?—বিটিসিএলের কারিগরি কক্ষে উপস্থিত কর্মী বা প্রকৌশলীরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
একই প্রশ্নের জবাবে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এগুলো অবশ্যই কোনো কারিগরি কাজে লাগে। বিটিসিএলের প্রকৌশলীরাই ভালো বলতে পারবেন।’
পাঁচ সদস্যের কমিটি: এদিকে, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা নিয়ে গত সোমবার বিশেষ বৈঠক করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। বিটিসিএল ও টেলিটকের মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিটিসিএল ও টেলিটক কর্তৃপক্ষ এর সদুত্তর দিতে পারেনি বলে বৈঠক সূত্রে জানায়।
পরে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা বন্ধে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি করা হয়। বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক মো. আহসান হাবীব খানকে প্রধান করে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির দুজন করে প্রতিনিধি কমিটিতে রাখা হয়। যদিও বিটিআরসিতে ইতিমধ্যে একই ধরনের একটি কমিটি বর্তমান রয়েছে।
টানা তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ বলে, সিডিআর অকার্যকর থাকায় বিটিসিএলের পক্ষে অনেক কিছুই ফাঁকি দেওয়া সম্ভব। এ বিষয়ে দ্রুত নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বৈঠকে।
সরকারি ল্যান্ডফোন প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে দিনে কত মিনিট বৈদেশিক কল আদান-প্রদান হচ্ছে, তারও কোনো হিসাব নেই। হিসাব পাওয়ার যন্ত্র মহাখালী আইটিএক্সের সিডিআর (কল ডিটেইল্ড রিপোর্ট) ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এতে সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিটিসিএলের এই অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রাজিউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিজেও এ অভিযোগ শুনেছি। তবে এটি সম্পূর্ণ গুজব। যদিও আমি জানি আমার মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত যাবতীয় অভিযোগের জন্য মন্ত্রী হিসেবে আমাকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’ কী পদক্ষেপ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় ভালো-খারাপ মিশিয়ে লোকজন থাকে। দেশ ও সরকারের ক্ষতি হয়, এমন কাজ কেউ করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অন্য নম্বর দিয়ে ভিওআইপি: গত ১১ এপ্রিল মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোন তাদের নম্বর দিয়ে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানের অভিযোগ আনে বিটিসিএলের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও বিটিসিএলকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ মার্চ ও পয়লা এপ্রিল, এই দুই দিনে গ্রামীণফোন সিরিয়াল নম্বর ৮৮০১৭০২০০০০৭৪ দিয়ে শেরেবাংলা নগর অ্যালকাটেল এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে সাত লাখ পাঁচ হাজার ৫৪৯ সেকেন্ডে মোট এক হাজার ৬৫৯টি অভ্যন্তরীণ কল এবং মহাখালী আইটিএক্স-৫ দিয়ে ৬০ লাখ ২৫ হাজার ২৪২ সেকেন্ড ব্যবহার করে মোট ১৩ হাজার ৩৯১টি বৈদেশিক কল আদান-প্রদান করা হয়েছে। এ হিসাবে মাসে দুই লাখের বেশি বিদেশি কল অবৈধভাবে করার অভিযোগ করেছে গ্রামীণফোন।
জড়িত ব্যক্তি: অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিটিসিএলের অবৈধ ভিওআইপির সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থাও সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে জড়িত ব্যক্তিদের নামের তালিকাসহ পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে।
অবৈধ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হিসেবে নাম রয়েছে, মহাখালী আইটিএক্সের বিভাগীয় প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান প্রামাণিক ও সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী রোনাল্ড চাকমা, মগবাজার টেলিফোন এক্সচেঞ্জের টেলেক্স, টিপি ও ইন্টারনেট বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী জমিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, একই এক্সচেঞ্জের আইটিএক্সের বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তৌফিক এবং সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানাসহ এক ডজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এঁদের মধ্যে হাবিবুর রহমান প্রামাণিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০১০ সালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে। ওই মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে জমা দেওয়া হবে বলে দুদক সূত্র জানায়। যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। ধমক দিয়ে বলেন, ‘মিডিয়ার কারণে শান্তিতে বাস করার উপায় নেই।’
এই এক্সচেঞ্জের মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল মামুনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই অভিযোগ প্রথম তিনি প্রতিবেদকের কাছ থেকেই শুনলেন।
সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মাসুদ রানা বিগত জোট সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে মাসুদ রানার বিষয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্স। অবৈধ ভিওআইপির অভিযোগ সম্পর্কে মাসুদ রানার কাছে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বিটিসিএলের কে কে এসব তথ্যের জোগান দিয়েছে, তাদের নাম জানতে চান। একপর্যায়ে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী রোনাল্ড চাকমার বিরুদ্ধে ভিওআইপির অভিযোগ অবশ্য অল্প দিনের। রোনাল্ড চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কার কাছে গল্প শুনতে গিয়েছিলেন। যারা ভিওআইপি করছে, তাদের খবর পান না, নিরীহদের পেছনে দৌড়ান।’
মগবাজার টেলিফোন এক্সচেঞ্জের টেলেক্স, টিপি ও ইন্টারনেট বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী জহিরউদ্দিন মোহাম্মদ বাবর তাঁর সম্পর্কে অভিযোগ অস্বীকার করে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নষ্ট সিডিআর, আইসিএক্সও নেই: বিটিসিএলের সিডিআর (কল ডিটেইল্ড রিপোর্ট) বিকল থাকলেও এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো মাথাব্যথা নেই। আবার ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিটিসিএলকে ইন্টার কানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) লাইসেন্স দেওয়া হলেও আজও এক্সচেঞ্জ স্থাপন করা হয়নি। ফলে বিদেশি কলের পাশাপাশি দেশি কলেরও সঠিক হিসাব তাদের কাছে নেই।
নিয়ম অনুযায়ী, দৈনিক বিদেশি কলের পরিমাণ সপ্তাহ শেষে বিটিআরসিতে জমা দেওয়ার কথা। বিধি অনুযায়ী কলপ্রতি তিন সেন্ট হিসাবে বিটিসিএল আয়ের ৬০ শতাংশ সরকারকে রাজস্ব হিসাবে জমা দেবে। কিন্তু অবৈধ ভিওআইপি করায় সরকার পুরো রাজস্ব থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে।
অতিরিক্ত এসটিএম-১: নিরবচ্ছিন্নভাবে ও দ্রুত আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানে ব্যবহার করা হয় এসটিএম-১ (সিঙ্ক্রোনাস ট্রান্সপোর্ট মডিউল)। বিটিআরসির তথ্যমতে, বৈদেশিক কল আদান-প্রদানের লাইসেন্সপ্রাপ্ত মীর টেলিকম ও নভোটেলের পাঁচটি করে এবং বাংলাট্রাকে চারটি এসটিএম ১ রয়েছে। অন্যদিকে বিটিসিএলের রয়েছে ৫৪টি এসটিএম ১।
প্রায় ১০ গুণের বেশি এসটিএম-১ ব্যবহার করেও বিটিসিএল, ওই সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একটির সমানও বিদেশি কল আনা-নেওয়া করতে পারে না।
তাহলে অতিরিক্ত এসটিএম ১ দিয়ে কী করা হয়?—বিটিসিএলের কারিগরি কক্ষে উপস্থিত কর্মী বা প্রকৌশলীরা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
একই প্রশ্নের জবাবে টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এগুলো অবশ্যই কোনো কারিগরি কাজে লাগে। বিটিসিএলের প্রকৌশলীরাই ভালো বলতে পারবেন।’
পাঁচ সদস্যের কমিটি: এদিকে, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা নিয়ে গত সোমবার বিশেষ বৈঠক করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। বিটিসিএল ও টেলিটকের মাধ্যমে অবৈধ ভিওআইপির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বিটিসিএল ও টেলিটক কর্তৃপক্ষ এর সদুত্তর দিতে পারেনি বলে বৈঠক সূত্রে জানায়।
পরে ভিওআইপির অবৈধ ব্যবসা বন্ধে পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ কমিটি করা হয়। বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক মো. আহসান হাবীব খানকে প্রধান করে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির দুজন করে প্রতিনিধি কমিটিতে রাখা হয়। যদিও বিটিআরসিতে ইতিমধ্যে একই ধরনের একটি কমিটি বর্তমান রয়েছে।
টানা তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ বলে, সিডিআর অকার্যকর থাকায় বিটিসিএলের পক্ষে অনেক কিছুই ফাঁকি দেওয়া সম্ভব। এ বিষয়ে দ্রুত নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বৈঠকে।