- Back to Home »
- Spotlight »
- বেসরকারি অপারেটরদের জন্যে ফেব্রুয়ারিতে চলে যেতে পারে থ্রি-জি
বৃহস্পতিবার থ্রি-জি’র নীতিমালা বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সঙ্গে পরামর্শ বৈঠকে এমন বক্তব্য দেন সুনীল কান্তি বোস, যিনি কিনা এ মাসেই টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান হিসেবে এ মাসেই দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।
এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো খসড়া থ্রি জি নীতিমালার ওপর তাদের মতামত দেয়। আর বৃহস্পতিবার এগুলো নিয়ে প্রথম আলোচনা হল। এরপর অপারেটরদের বক্তব্য সন্নিবেশিত করে আরো একটি বৈঠক হবে বলে জানা গেছে। এর আগে ৭ অক্টোবর একই বিষয়ে বিটিআরসি’র সঙ্গে বৈঠক করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়।
বৈঠকে অংশ নেওয়া গ্রামীণফোনের কর্পোরেট বিভাগের প্রধান মাহমুদ হোসাইন জানান, খুবই ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। এখাতে তাদের বেশ কিছু দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে সচিব সম্মতি দিয়েছেন। আবার কয়েকটি দাবি গ্রহনযোগ্য নয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে বৈঠকে গ্রামীনফোনের বক্তব্য বিষয়ে তিনি বলেন, নীতিমালা এবং সেক্টরটির পরিচালনার ক্ষেত্রে আরেকটু দীর্ঘ্যমেয়াদী সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা ইতিবাচক ফল দিতে পারে বলেও জানিয়েছে গ্রামীণফোন। তাতে করে থ্রি জি’র লাইসেন্স ফি ও স্পেকট্রাম থেকে সরকার অনেক বেশী টাকা পেতে পারে বলেও জানায় গ্রামীণফোন।
মাহমুদ হোসাইন জানান, তাদের এই বক্তব্যের সঙ্গে সচিব সুনীল কান্তি বোসও সম্মতি দেন। তাছাড়া গ্রামীণফোনের প্রস্তাব অনুসারে উন্মুক্ত নিলামের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে সংস্কার করা হয় বলেও জানান তিনি।
এদিকে বৈঠকে রবি নিলাম ছাড়াই একটি ফি নির্ধারণ করে সবাইকে লাইসেন্স দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করে। কিন্তু এমন প্রস্তাব তৎক্ষনাৎ নাকচ হয়ে যায়। সূত্র জানিয়েছে, এ সময় সচিব বলেন, সরকারের টাকা প্রয়োজন। আর এর জন্যে অবশ্যই নিলাম করে টাকা বের করতে হবে। আর এ বিষয়ে সরকারের প্রধান নির্বাহীও আগে থেকে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। তাই এখান থেকে পেছন ফেরার কোনো সুযোগ নেই।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য অপারেটর লাইসেন্সের মেয়াদ ২০ বছর করার প্রস্তাব করে। একই সঙ্গে নবায়ন প্রতি ৫ বছরের জন্যে না করে সেখানেও দীর্ঘ্য মেয়াদের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু সচিব জানান, ১৫ বছর মেয়াদী লাইসেন্স হবে। তবে পরবর্তী নবায়ন ৫ বছরের জন্যে না হয়ে আরো ১৫ বছরের জন্যে নবায়ন হতে পারে।
এর আগে বেশ কয়েকটি অপারেটর থ্রি জি’র স্পেকট্রামের নিলামে প্রতি মেগাহার্টজের ফ্লোর প্রাইস ধরার প্রস্তাব করে। সরকারের দিক থেকেও এই প্রস্তাব গ্রহন করা হচ্ছে বলেও বৈঠকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এর আগে খসড়া নীতিমালায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি প্রতি মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের ফ্লোর প্রাইস ৩ কোটি ডলার ধরার প্রস্তাব করেছিল।
এর আগে গত ২৮ মার্চ বিটিআরসি থ্রি জি নীতিমালার একটি খসড়া তৈরী করে মন্ত্রনালয়ে পাঠায়। খসড়া ওই নীতিমালায় বিটিআরসি টেলিটকসহ পাঁচটি অপারেটরকে থ্রি-জি সেবা দেওয়ার কথা বলে। এর মধ্যে আবার একটি নতুন অপারেটর রাখতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মন্ত্রনালয়ের যে সব কর্মকর্তারা থ্রি জি’র নীতিমালা নিয়ে কাজ করছে তাদের একজন জানিয়েছেন, টু জি’র লাইসেন্স নবায়নের স্পেকট্রামের মূল্য যেহেতু দেড়শ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল, থ্রি জি’র নিলামের ফ্লোর প্রাইসেও সেটি রাখা যায়। ওই কর্মকর্তা বলেন, বেশী টাকা আনতে গিয়ে আবার যাতে উল্টো সরকারের টাকা পাওয়ার পথ বন্ধ না হয়ে যায় সে দিকেও তাদেরকে খেয়াল রাখ হচ্ছে।
বিনিয়োগের অর্থ সব ডলারে আনতে হবে। খসড়া নীতিমালায় এমন শর্ত দেওয়া আছে। কিন্তু মন্ত্রনালয় মনে করে থ্রি জি’র নিয়োগের পুরো অর্থ ডলারে আনতে বলা যুক্তিযুক্ত নয়। সেক্ষেত্রে কেবল স্পেকট্রাম কেনা এবং লাইসেন্স ফি’র অর্থই ডলারে (সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ) হিসেবে আনাতে বলা যেতে পারে। ওই কর্মকর্তা বলেন, কোনো অপারেটরের হঠাৎ করে দুই কোটি টাকা লাগবে আর তাও বিদেশ থেকে ডলারে আনতে হবে সেটি করা ঠিক হবে না। অপারেটররাও এ বিষয়ে কড়া আপত্তি জানান। তবে মন্ত্রনালয় বিষয়টি মেনে নেওয়ায় আলোচনা আর এগুয়নি।
জানা গেছে, এসব আলোচনার পর এই নীতিমালা চূড়ান্ত করতে অর্থ মন্ত্রনালয় এমনকি সরকার প্রধানের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে আরো কিছু পরিবর্তন হতে পারে।
Post a Comment