- Back to Home »
- Spotlight , teletalk »
- টেলিটক থ্রি-জি'র জন্য পুরোপুরি প্রস্তুতঃ টেলিটক
মুজিবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, টেলিটক |
প্রিয় টেক: টেলিটক কি থ্রি জি’র জন্য প্রস্তুত?
মুজিবুর রহমান:পুরোপুরি প্রস্তুত। রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থ্রি জি সেবা উদ্ভোধন করবেন। প্রথম দফায় ঢাকা এবং ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ এলাকায় অত্যাধুনিক এই সেবা পাওয়া যাবে। খুব তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে টেলিটক প্রচারণায় যাবে।
রাজধানীর টেলিটক গ্রাহকরা যাতে স্বাচ্ছন্দে এই সেবাটি উপভোগ করতে পারেন তার জন্যে সকল রকম প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকায় বিটিএস সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে কল ড্রপ বা নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা কমে যাবে। থ্রি জি’র প্রতি গ্রাহকদের অত্যাধুনিক চাহিদার কথা বিবেচনা করেই এসব আয়োজন করা হয়েছে।
প্রিয় টেক: গ্রাহক থ্রি জি-তে গ্রাহক সবচেয়ে বেশী কি সুবিধা পেতে পারেন?
মুজিবুর রহমান: সংশ্লিষ্টরা বলছেন, থ্রিজি চালু হলে মোবাইল হ্যান্ডসেটে ইন্টারনেটের গতি বাড়বে অন্তত দশগুন। এখন যে কাজ করতে দশ মিনিট লাগে তখন সেটি হবে এক মিনিটে। আর মোবাইল ফোনেই দেখা যাবে টেলিভিশন। প্রতি মিনিটে খরচ হবে দুই টাকা। আর যিনি মোবাইলে ফোন করেছেন তার ছবিও দেখা যাবে, জানা যাবে তার অবস্থান। একে বলা হচ্ছে ভিডিও কল। এর খরচ পড়বে দুই টাকারও কম। টেলিটকের থ্রি-জির সব সার্ভিসেই ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা থাকবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই ঘরে বসেই সন্তানদের নিরাপত্তা কার্যক্রম পর্যবেক্ষন করা যাবে। শহরের সব সড়কের গাড়ির গতিবিধি দেখে অনাকাঙ্খিত জ্যাম নিয়ন্ত্রণও করতে পারবে পুলিশ।
প্রিয় টেক: আমাদের এখানে থ্রি জি’র মাধ্যমে মোবাইলে টিভি দেখার বিষয়টিই তো আবার সবচেয়ে বড় হয়ে উঠবে না?
মুজিবুর রহমান: সেটা হতেই পারে। থ্রি জি’র অন্যতম প্রধান বিষয়টি তো হবে মোবাইল বিনোদন। এ বিষয়টি টেলিটক মাথায় রেখেছে। আপাতত উদ্ভোধনের পরদিন থেকে ৫টি টেলিভিশন মোবাইলে দেখা যাবে। বিটিভি’র বাইরেও সময় টিভি, জিটিভি, আরটিভি ও মাইটিভি’র সঙ্গে আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। অন্য টেলিভিশনগুলোকেও এর মধ্যে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন মুজিবুর রহমান।
প্রিয় টেক: আর কোন বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন?
মুজিবুর রহমান: ভিডিও কল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। থ্রি জি মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ গতিতে তথ্য পরিবহন সম্ভব বলে জিপিএসের মাধ্যমে পথ নির্দেশনা পাওয়া, উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবহারসহ ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়া বিষয়টিও থাকছে। এসব সেবা যাতে গ্রাহকরা সঠিকভাবে পেতে পারে তার জন্যে রাজধানীতে বিটিএসের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা শহরের ৪ লাখ গ্রাহক এই সুবিধা পাবেন। থ্রিজি’তে কোনো কল ড্রাপ থাকবে না। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে।
প্রিয় টেক: আপনারা নাকি এখনো রাজধানীর ৪০টি বিটিএস চালু করতে পারেননি।
মুজিবুর রহমান: বিদ্যুৎ সমস্যা আছে। এটা নিয়ে কথা বলতে চাই না।
প্রিয় টেক: কল রেটের বিষয়ে কি কোনো পার্থক্য হবে?
মুজিবুর রহমান: প্রাথমিকভাবে টেলিটক যে কলের যে হার নির্ধারণ করেছে তাতে ভয়েস কলের (শুধু কথা বলা) রেট এখন যা আছে থ্রি-জি’তেও তাই থাকবে। অন্যান্য সুবিধার জন্য যে বিল ঠিক করা হচ্ছে তা পাশবর্তী দেশ ভারত ও শ্রীলংকার চেয়ে কম হবে এটি নিশ্চিত করে বলা যায়।
প্রিয় টেক: থ্রি জি বিষয়ে জানতে গ্রাহক কোথায় যাবে?
মুজিবুর রহমান: রাজধানীতে টেলিটকের তিন হাজার রিটেইলার পয়েন্ট ও ৮টি কাস্টমার সেন্টার থেকে সিম বিক্রি হবে। গ্রাহকের দেয়া তথ্য নিশ্চিত হয়ে তবেই সিম চালু হবে। আর যারা পুরনো সিম থ্রিজিতে পরিবর্তন করতে চান তাদেরও রিটেলার বা কাস্টমার সেন্টারে গিয়ে সিম পরিবর্তন করতে হবে। ওই সব কাস্টমার কেয়ার সেন্টার এবং রিটেইলার পয়েন্টেই থ্রি জি সম্পর্কে জানা যাবে।
প্রিয় টেক: দশ সেকেন্ডের পালস কি থ্রি জি’র গ্রাহকরাও পাবেন?
মুজিবুর রহমান: টেলিটকের থ্রি-জির সব সার্ভিসেই ১০ সেকেন্ড পালস সুবিধা থাকবে। বিটিআরসি’র তো এ বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। ভিডিও কলসহ অন্যান্য যে কোনো কলে এই ব্যবস্থা থাকছেই।
প্রিয় টেক: কবে নাগাদ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের গ্রাহকরাও থ্রি জি পাবে?
মুজিবুর রহমান: ডিসেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রাম এবং জানুয়ারিতে সিলেট। পরবর্তীতে বৃহত্তর জেলা এবং এরপর জেলা ও গ্রোথ সেন্টার। আপাততো এই হচ্ছে স্বল্প মেয়াদী লক্ষ্য। তবে এক বছরের মধ্যেই যাতে দেশব্যপী সেবা ছড়িয়ে দেওয় যায় তার প্রচেস্টা চলছে।
প্রিয় টেক: সংখ্যাগত কোনো পরিকল্পপনা আছে কি?
মুজিবুর রহমান: এখন অন্তত চার লাখ গ্রাহক পেতে চায় টেলিটক। আর ডিসেম্বরে চট্টগ্রামে পৌঁছাতে পারলে গ্রাহক আট লাখে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সব জেলায় যেতে পারলে অন্তত ১৭-১৮ লাখ থ্রি জি’র গ্রাহক পাওয়া যাবে বলে মনে করি।
প্রিয় টেক: থ্রি জি’র ক্ষেত্রে সংযোগ যেমন গুরুত্বপূর্ণ একই সঙ্গে মোবাইল হ্যান্ডসেটও অত্যাধুনিক হতে হবে। এই বিবেচনায় দেশে এর ভবিষ্যৎ কেমন?
মুজিবুর রহমান: বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন যতোটা গুরুত্ব পেয়েছে, যেভাবে এর বিস্তার হয়েছে; থ্রি জি’র ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না এটি নিশ্চিত। এর সঙ্গে বাড়তি কিছু খরচের বিষয় জড়িত আছে। শিক্ষার বিষয়টিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক উন্নত এলাকায়ই থ্রি জি সফল হয়নি। তবে বাংলাদেশে যাতে এর বিস্তৃত সেবা গ্রাহক পায় সে লক্ষ্যে টেলিটক কাজ করছে।
প্রিয় টেক: বিদ্যমান গ্রাহকের মধ্য থেকে কিভাবে থ্রি জি’র গ্রাহক নির্বাচিত করা হবে?
মুজিবুর রহমান: এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কিছু প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হয়েছে। শর্ত পূরণ করতে পারলে লটারির মাধ্যমে এখান থেকে প্রায় আড়াই লাখ গ্রাহককে থ্রি জি দেওয়া হবে। তাদেরকে অবশ্যই ঢাকার গ্রাহক হতে হবে। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিতদের এসএমএস করে সংযোগ নেওয়ার জন্যে বলে দেওয়া হবে।
প্রিয় টেক: অন্য কোনো অপারেটর এখনো থ্রি জি’র লাইসেন্স পেল না। অথচ আপনারা সেবা নিয়ে আসতে যাচ্ছেন। এটি কিভাবে দেখেন?
মুজিবুর রহমান: এটি একেবারেই সরকারের সিদ্ধান্ত। সরকারি কোম্পানি হিসেবে টেলিটক বাড়তি কিছু সুবিধা পেতেই পারে। তবে প্রতিযোগিতার মধ্যে লড়াই করে এগিয়ে যেতে তৈরীই আছে টেলিটক।
Post a Comment