- Back to Home »
- Spotlight »
- আগামী বছর চালু হচ্ছে মোবাইল নাম্বার পোর্ট্যাবিলিটি (এমএনপি)
আগামী বছর চালু হচ্ছে মোবাইল নাম্বার পোর্ট্যাবিলিটি (এমএনপি)। ফলে বিদ্যমান নম্বর ঠিক রেখেই যেকোনো অপারেটরের সেবা নিতে পারবেন গ্রাহক। এতে সেলফোন অপারেটরদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে সেবার মানও।
এমএনপি নীতিমালা তৈরির কাজ এরই মধ্যে শুরু করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। কমিশনের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস বণিক বার্তাকে বলেন, এমএনপি চালুর কাজ শুরু হয়েছে। এ খাতে সেবার মান বাড়াতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে বিটিআরসি। গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করতেই এটি প্রয়োজন। সেবাটি চালু করতে বেশকিছু প্রযুক্তিগত দিক রয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে থ্রিজি চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। থ্রিজি লাইসেন্স দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আগামী বছর এমএনপি চালু করা হবে।
একজন গ্রাহকের একটি নম্বরের মাধ্যমে যেকোনো সেলফোন অপারেটরের সেবাগ্রহণের সক্ষমতা এমএনপি নামে পরিচিত। এটি চালু হলে গ্রাহক তার বর্তমান নম্বরটি ঠিক রেখে অন্য যেকোনো অপারেটরের গ্রাহক হতে পারবেন। অর্থাৎ অপারেটর পরিবর্তন করলেও গ্রাহকের আগের নম্বরটি ঠিক থাকবে। ফলে গ্রাহক নম্বর পরিবর্তন না করেই অপারেটরদের দেয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও কলচার্জ বিবেচনা করে প্রয়োজন ও পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো অপারেটরের সেবা নিতে পারবেন। এতে পুরনো সংযোগ ও সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্নতা এড়াতে পারবেন গ্রাহক।
বর্তমানে নম্বর দেখে যেভাবে কোনো সেলফোন অপারেটরকে চিহ্নিত করা যায়, এমএনপি চালু হলে তা সম্ভব হবে না। এটি চালু হলে গ্রাহকের ফোন নম্বরের প্রথম অংশটি পুরোপুরি গৌণ হয়ে যাবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমএনপি চালুর ক্ষেত্রে ভিন্ন দুটি পদ্ধতি চালু রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিজেই এমএনপিসেবা নিয়ন্ত্রণ করে অথবা তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এমএনপিসেবা দেয়া হয়। জানা গেছে, দেশে এমএনপি চালু করতে তৃতীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হবে। এমএনপি নীতিমালা চূড়ান্ত হলে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে এ লাইসেন্স দেয়া হবে।
এ্র প্রসঙ্গে রবির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদুর রহমান বলেন, গ্রাহকের কাছে এ ধরনের সেবার চাহিদা আছে কি না, তা দেখতে হবে। এ জন্য বাজার বিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে।
এমএনপি চালুর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি নীতিমালাও দরকার।
টেলিকমসেবায় গতি আনতে বিশ্বের অনেক দেশে এরই মধ্যে এমএনপি চালু হয়েছে। মূলত সেলফোন অপারেটরের মনোপলির সুযোগ কমিয়ে আনতে এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগিতা বাড়াতে এটি চালু করা হয়েছে। এটি চালু হয়েছে, এমন দেশগুলোয় অপারেটরের মধ্যে প্রতিযোগিতা তুলনামূলকভাবে বেশি। গ্রাহক ধরে রাখতে প্রত্যেক অপারেটরই সেবার মানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ ধরনের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সামগ্রিকভাবে লাভবান হন গ্রাহক। তবে এমএনপি চালুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রায় সব দেশের সেলফোন অপারেটরের মধ্যেই প্রাথমিকভাবে অনীহা থাকে।
এমএনপি সুবিধা প্রথম চালু হয় সিঙ্গাপুরে। দেশটিতে ১৯৯৭ সালে সেবাটি চালু হয়। বর্তমানে বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে এ সেবা চালু রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এমএনপি সবার আগে চালু করে পাকিস্তান। ২০০৭ সালের মার্চে পাকিস্তানে সেবাটি চালু হয়। ভারতে এটি চালু হয় ২০১০ সালের নভেম্বরে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমএনপি চালু হলে তুলনামূলক লাভবান হবে গ্রাহকসংখ্যার বিচারে ছোট অপারেটররা। কারণ সেবার মানে সন্তুষ্ট না হলেও অনেক সময়ই বড় অপারেটরের গ্রাহকরা নম্বর পরিবর্তনের ঝামেলায় যেতে চান না। গ্রাহকসংখ্যা বেশি হওয়ায় বড় অপারেটরদের এমন গ্রাহকের সংখ্যা স্বভাবতই বেশি। ফলে এমএনপি চালু হলে এ ধরনের গ্রাহক নম্বর পরিবর্তন না করে অন্য অপারেটরের সেবা নিতে পারবেন। এতে বড় অপারেটররা বেশ কিছু গ্রাহক হারাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Post a Comment