চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরের লাইসেন্স নবায়নের আবেদন গ্রহণ করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। স্পেকট্রাম চার্জ এবং অন্যান্য ফির টাকা জমা দেওয়ার জন্য ১৫ দিন সময় দিয়ে আজ সোমবার গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি এবং সিটিসেলকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হবে। পাওনা পরিশোধের সঙ্গে সঙ্গে আবেদনে কাগজপত্রের যেসব ঘাটতি আছে সেগুলোও ১০ দিনের মধ্যে দেওয়ার কথা চিঠিতে উল্লেখ থাকবে।
রোববার সকালে কমিশনের এক জরুরি বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় বিটিআরসি। বৈঠক শেষে বিটিআরসির শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, কমিশন চারটি অপারেটরকে তাদের বাকি থাকা ডকুমেন্ট দেওয়ার পাশাপাশি লাইসেন্স নবায়ন নীতিমালা অনুসারে স্পেকট্রামের মূল্য পরিশোধ করতে বলেছে। জানা গেছে, সব অপারেটরকে তাদের দেনা পরিশোধ করতে বললেও গ্রামীণফোনের অডিট আপত্তির তিন হাজার ৩৪ কোটি টাকাকে লাইসেন্স নবায়নের সঙ্গে এখনই মেলাতে চাইছে না বিটিআরসি। সে কারণে এ বিষয়টি চিঠিতে উল্লেখ করা হচ্ছে না। চিঠিতে সব অপারেটরের স্পেকট্রাম মূল্য কখন কতটা পরিশোধ করতে হবে সেটি উল্লেখ করে দেওয়া থাকছে।
নীতিমালা অনুসারে, প্রত্যেক অপারেটরকে লাইসেন্স নবায়ন বাবদ যে অর্থ দিতে হবে তার ৪৯ শতাংশ এখনই পরিশোধ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের কোষাগারে এ খাত থেকে জমা পড়বে ৩ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। বাকি টাকা আসবে দেড় বছরে তিন কিস্তিতে ১৭ শতাংশ হারে। প্রতি কিস্তির মেয়াদ হবে ১৮০ দিন করে। এদিকে লাইসেন্স নবায়নে স্পেকট্রাম মূল্য নির্ধারিত হয়েছে প্রতি মেগাহার্টজ দেড়শ' কোটি টাকা হারে। গ্রাহক সংখ্যার ভিত্তিতে এ মূল্যের ওপর কিছু হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৩০ জুনে যে অপারেটরের যত গ্রাহক ছিল তার ওপর ভিত্তি করেই মার্কেট কম্পিটিশন ফ্যাক্টর (এমসিএফ) নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে গ্রাহক বেশি হওয়ায় গ্রামীণফোনের স্পেকট্রামের প্রকৃত মূল্য ভিত্তিমূল্যের চেয়ে এক দশমিক ৪৮ গুণ বেশি হয়েছে। সে কারণে ১৪ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের ভিত্তিমূল্য ২ হাজার ১৯০ কোটি টাকা হলেও তাদের প্রকৃত মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এর ৪৯ শতাংশ এবং ১০ কোটি টাকা লাইসেন্স ফি হিসেবে তাদের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে দিতে হবে এক হাজার ৫৯৮ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
বাংলালিংকের ১২ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ স্পেকট্রামের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৭১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ১৫ দিনের মধ্যে তাদের দিতে হবে ৯৭৬ কোটি টাকা। রবিকে স্পেকট্রামের মূল্য ৪৯ শতাংশসহ এখনই দিতে হবে ৯৪১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। একই সময়ে সিটিসেলকে দিতে হবে ২৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এর আগে গত সপ্তাহে চারটি অপারেটর আরও ১৫ বছরের জন্য তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করে। আগামী ১০ নভেম্বর অপারেটর চারটির ১৫ বছরের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হবে। স্পেকট্রাম চার্জের ওপরে অপারেটরদের ভ্যাট দিতে হবে কি-না এ বিষয়টি এখনও পরিষ্কার হয়নি। তার কারণে ভ্যাট কেটে রেখে অপারেটররা এত দিন বিটিআরসিকে যেভাবে পাওনা পরিশোধ করেছে এ ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না।

- Copyright © 2013 telecom bd - Metrominimalist - Powered by Blogger - Designed by Johanes Djogan | Distributed by Rocking Templates -