চলতি বছরের শেষ নাগাদ বা আগামী বছরের শুরুতে থ্রিজি ব্যবহার করতে পারবেন সকল গ্রাহক। আর দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪ থেকে ৫ লাখ গ্রাহককে থ্রিজি সেবা দেয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবর রহমান। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির টেলিটকের পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো তৈরি না করে সেবা চালু করার বিষয়টিকে গ্রাহক ধরার কৌশল হিসেবে দেখছে।

প্রাথমিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি ৪-৫ লাখ নতুন গ্রাহক তৈরি করতে যাচ্ছে থ্রিজি চালু করে। থ্রিজির ঘোষণা আসার পর থেকে টেলিটকের গ্রাহক বাড়ছে। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে প্রথম পর্যায়ে করপোরেট দুনিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরই কেবল এই সংযোগ দেয়া হচ্ছে।পরীক্ষামূলকের পর ১৪ অক্টোবর থেকে চালু হচ্ছে টেলিটক এর থ্রিজি সেবা।

তবে শুরুতেই এই সেবা পাচ্ছেন না সাধারণ গ্রাহকরা। ইতিমধ্যেই যারা গ্রাভিটি ক্লাবের সদস্য হয়েছেন তাদের সকলকেও শুরুর দিন থেকে সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই থ্রিজি সেবা প্রাপ্তির তালিকায় প্রথমেই নির্বাচন করা হয়েছে কর্পোরেট গ্রাহকদের।

একই সঙ্গে থ্রিজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে মুঠোফোনে দেশী টিভি’র অনুষ্ঠান সম্প্রচারের বিষয়টিও চূড়ান্ত করতে সক্ষম হয়নি টেলিটক কর্তৃপক্ষ। টেলিটক এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে।সূত্র মতে, যারা ইতোমধ্যে গ্র্যাভিটি ক্লাবের সদস্য হয়েছেন তাদের মধ্য থেকে মাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকা বহারকারীরা উদ্বোধনের পর থেকে এ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

জানাগেছে, আগামী ১৪ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ভিডিও কল করে থ্রিজির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেড় ঘণ্টা ব্যাপী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে। ওই অনুষ্ঠান গ্র্যাভিটি ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে যারা থ্রিজি সেবা উপভোগ করছেন তারা মোবাইল ফোনে সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন বলে নিশ্চিত করেছেন টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, টেলিটক এখনো অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেনি। তবে দেশীয় ৫টি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলোর সঙ্গে লিংক তৈরির প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন হয়েছে মাত্র। এসব বাস্তবায়ন করতে আরো ৬ থেকে ৮ মাস সময় প্রয়োজন।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর লিংক শেয়ার, কনটেন্ট প্রোভাইডারদের সঙ্গে চুক্তির বিষয়গুলোও সম্পন্ন না হওয়ায় আপাতত থ্রিজি দিয়ে স্যাটেলাইট টিভিতে সরাসরি খেলা দেখা আপাতত সম্ভব হবে না।

টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবর রহমান বলেন, “আমরা শুরতে ইন্টারনেট সক্ষমতা বৃদ্ধি ও ডেটা কানেক্টিভিটি (২ এমবিপিএস) নিয়ে কাজ করছি। কনটেন্টের (আধেয়) বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।”

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে টেলিটকের থিজি নেটওয়ার্কে ডেটা কানেক্টিভিটির পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্স করা যাবে। এজন্য মোবাইল ফোন সেট বা ল্যাপটপে বেশি মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা থাকতে হবে।

এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও এরিনাফোন বিডির পরিচালক ফজলে রাবিব বলেন, “মোবাইল ফোনে থ্রিজি ব্যবহার করে নাটক, গান বা মুভি দেখতে চাইলে উচ্চক্ষমতার ব্যাটারি প্রয়োজন। স্মার্টফোনেই উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাটারি আছে। এ বিষয়টিও ব্যবহারকারীদের ভাবতে হবে। তা না হলে অল্প দিনের মধ্যেই মোবাইলফোন সেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।”

তিনি জানান, দেশের সিংহভাগ টেলিটক সিম ব্যবহারকারীর মোবাইল ফোন সেট মাঝারি মানের। ডেটাকার্ড (ইন্টারনেট মডেম) দিয়ে ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটারে ব্যবহার করলে নাটক, মুভি বা গান উপভোগ করা যাবে।

প্রসঙ্গত, টেলিটকের জন্য ‘২১১০ থেকে ২১৬০’ মেগাহার্টজ তরঙ্গের (ফ্রিকোয়েন্সি) মধ্যে ১০ মেগাহার্টজ বরাদ্দ দিয়েছে বিটিআরসি। রাষ্ট্রায়াত্ব প্রতিষ্ঠান বলেই টেলিটক অগ্রাধীকারভিত্তিতে লাইসেন্স পেয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত থাকায় প্রতিষ্ঠানটি (লাইসেন্সের নিলাম) আগেই থ্রি-জি সেবা চালু করতে যাচ্ছে। আগামী জানুয়ারিতে থ্রি-জির নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। ওই নিলামে টেলিটকও অংশ নিয়ে লাইসেন্স গ্রহণ করবে।

- Copyright © 2013 telecom bd - Metrominimalist - Powered by Blogger - Designed by Johanes Djogan | Distributed by Rocking Templates -